দুপুর থেকে টানা সাড়ে চার ঘণ্টার অভিযান শেষে ঢাকার মুকুটহীন (ইসমাইল হোসেন চৌধুরী) সম্রাটের বর্তমান আবাসস্থল ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ার কেন্দ্রীয় কারাগার। আজ রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সম্রাটের কাকরাইলের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অভিযান শেষে র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। এরপর সম্রাটকে কারাগারে নিয়ে যায় র‍্যাব।

এদিকে আজ ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে খবর রটে যায় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপর সকালে তাঁকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে আনা হয় র‍্যাব সদর দপ্তরে। এরপর দুপুরে নিয়ে আসা হয় কাকরাইলে নিজের কার্যালয়ে।

দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে সম্রাটকে নিয়ে তাঁর কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে র‍্যাব। চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এরপর সেখানে ডাকা হয় সংবাকর্মীদের। দেখানো হয় সম্রাটের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র, ক্যাঙ্গারুর চামড়া, বিদেশি মদের বোতল, নির্যাতনের জন্য ইলেকট্রনিক শক দেওয়ার যন্ত্র।

র‍্যাবের পক্ষ থেকে অভিযান নিয়ে করা হয় সংবাদ সম্মেলন। জানানো হয়, মুকুটহীন সম্রাটকে ছয় মাসের সাজা দেওয়ার কথা।

সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে যখন সম্রাটকে কার্যালয় থেকে বের করা হয় তখন বিক্ষোভ শুরু করে তাঁর নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। আটক করা হয় তিনজনকে। সম্রাটকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় অনেক নেতাকর্মীকে কাঁদতে দেখা যায়।

সম্রাটকে নিয়ে যাওয়ার পর এনটিভি অনলাইনের কথা হয় কয়েকজন নেতাকর্মী ও পথচারীর সঙ্গে। তারা বলেন, সম্রাট আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য মুকুটহীন সম্রাট। তিনি রাজনৈতিক হিরো। সাধারণত যেখানে পরিবার বা বাবা ভাইয়ের প্রভাব থেকে বড় রাজনৈতিক নেতা হয়ে যায় তিনি ছিলেন তার ব্যাতিক্রম। সরাসরি মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে তৃণমূল থেকে আজকের সম্রাট হয়েছেন।

তারা বলেন, আজকে সত্যি অবাক লাগছে সম্রাটের হাতে হাতকড়া। এটা কেউ ভাবতেও পারেনি তার হাতে এভাবে হাতকড়া পরানো হবে। এ সময় কয়েকজনকে কান্নাকাটি করতেও দেখা যায়।

সম্রাটকে নিয়ে যাওয়ার পর এনটিভি অনলাইনের কথা হয় জামাল উদ্দিন নামের লক্ষ্মীপুরের এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ভাইকে এভাবে দেখব কখনো ভাবতে পারিনি। সব সময় নেতাকর্মী ও দলের জন্য মরতেও প্রস্তুত থাকা মানুষটিকে আজ হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভাবতে কষ্ট হচ্ছে, এটা কি আমাদের সম্রাট ভাই?

ইমরুল কায়েস নামে সেগুনবাগিচা এলাকার এক যুবলীগকর্মী বলেন, ‘সম্রাট ভাইয়ের ডাকে যুবলীগের হাজারো নেতাকর্মী দলের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত থাকে সব সময়। আজ সেই সম্রাট ভাইকে আমাদের সামনে দিয়ে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

এ সময় ইমরুল কায়েস অঝোরে কেঁদে উঠেন। বলেন, ‘ভাই নিজের জন্য নয়, সব সময় দল ও নেতাকর্মীদের কথা চিন্তা করেছেন। তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছেন।’

সম্রাটকে দেখে এক বয়স্ক লোক বলেন, ‘এত দিন ছিল এক জীবন। আজ থেকে হয়ে গেল অন্যজীবন। আসলে প্রয়োজন শেষ হলে কেউ কারো নয়। আজ সম্রাটের এ অবস্থা হবে কেউ কখনো ভাবতেও পারেনি।’

Samrat casino king
Casino King

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here